এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, সে ধ্বনি শুনে শয়তান পিছন ঘুরে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালিয়ে যায় যেন আজানের ধ্বনি সে শুনতে না পায়।
আজান শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে আসে।
আবার যখন ইকামত দেওয়া হয় তখন সে পলায়ন করে। ইকামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে আসে এবং নামাজ আদায়কারীদের মনে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করতে থাকে। সে তাকে বলে, এটা স্মরণ কর, এটা স্মরণ কর। সে কথাগুলো নামাজের আগে তার স্মরণও ছিল না। শেষ পর্যন্ত আদায় আদায়কারী দ্বিধায় পড়ে যে, সে বলতেও পারে না যে, কত রাকাত পড়ল। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৪৩)
আল্লাহর কাছে শপথ করার পর শয়তান প্রতি মুহূর্তে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার এবং আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল করার চেষ্টা করে। নামাজ ঠিকমতো না পড়তে এবং নামাজে দাঁড়ালে মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করতেও কাজ করে সে। মানুষকে বিপদগামী করতে ইচ্ছামতো কাজ করতে পারলেও কিছু মুহূর্ত আছে যখন শয়তান দৌঁড়িয়ে পালাতে থাকে এবং কোনো রকমে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। এমন একটি মুহূর্ত হলো আজানের মুহূর্ত। এ সময় শয়তান বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে।
পৃথিবীতে সব ধরনের অন্যায়-অনাচারের মূলে থাকে ইবলিশের কুমন্ত্রণা। আল্লাহ তায়ালার দরবার থেকে বিতাড়িত হয়ে ইবলিশ শপথ করেছিলো সে নিজের মতো আদম সন্তানকেও বিপদগামী করবে। তাই প্রথমেই সে ফন্দি এঁটে আদি পিতা হজরত আদম আ.-কে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামিয়ে আনে।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘সেই সময়কে স্মরণ কর, যখন আমি ফিরিশতাদেরকে বলেছিলাম, আদমকে সিজদা করো। তখন তারা সিজদা করল, কিন্তু ইবলীস করল না। সে বলল, আমি কি তাকে সিজদা করব, যাকে আপনি মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন? সে বলতে লাগল, বলুন তো, এই কি সেই সৃষ্টি, যাকে আপনি আমার ওপর মর্যাদা দান করেছেন! আপনি যদি কিয়ামতের দিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দেন, তবে আমি তার বংশধরদের মধ্যে অল্পসংখ্যক ছাড়া বাকি সকলের চোয়ালে লাগাম পরিয়ে দেব।
আল্লাহ বললেন, যাও, তাদের মধ্যে যে কেউ তোমার অনুগামী হবে, জাহান্নামই হবে তোমাদের সকলের শাস্তি, পরিপূর্ণ শাস্তি। তাদের মধ্যে যার উপর তোমার ক্ষমতা চলে নিজ আহ্বানের দ্বারা বিভ্রান্ত কর, তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা তাদের উপর চড়াও হও, তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে অংশীদার হয়ে যাও এবং তাদেরকে যত পার প্রতিশ্রুতি দাও। বস্তুত শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়। নিশ্চয়ই আমার যারা বান্দা, তাদের উপর তোমার কোনো ক্ষমতা চলবে না। তোমার রক্ষকরূপে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট। (সূরা ইসরা, আয়াত : ৬৫)
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২৪
জেএইচ